#টেকনিক্যাল বনাম অনপেজ এসইও: বর্তমানে এসইও অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি টার্ম। একটি নতুন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট, কিংবা ইন্ডিভিজুয়াল ওয়েবসাইট এর জন্য প্রোপার এসইও করা এক কথায় বাধ্যতামূলক, যদি সেই ওয়েবসাইটকে Worthy করতে হয়। এসইও অনেক বড়ো একটি টপিক। এসইও মূলত তিনটি ভাগে বিভক্ত। সকল এসইও অ্যাক্টিভিটি এই তিনটি ধাপের মধ্যে ইনক্লুড করে ফেলা যায়। সেই তিনটি ভাগ হলো- অনপেজ এসইও, অফপেজ এসইও আর টেকনিক্যাল এসইও। এগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো টেকনিকাল এসইও এবং অনপেজ এসইও। বৃহদার্থে অবশ্য টেকনিক্যাল এসইওকে অফপেজ ক্যাটেগরিতেও ফেলা যায়! অনেকে এসইওর এসব বিষয় নিয়ে কনফিউশনে পড়ে যায়। তাই, আজকের পোস্টে আমি টেকনিকাল এসইও ও অনপেজ এসইও এর মধ্যে তুলনামূলক বিশ্লেষণ করব।
টেকনিক্যাল বনাম অনপেজ এসইও
টেকনিক্যাল এসইও
টেকনিক্যাল এসইও হলো, ওয়েবসাইটের গুরুত্বপূর্ণ সেসব সেটাপ, যা না করলে ওয়েবসাইট আর সার্চ ইঞ্জিনের মধ্যে প্রোপার কানেকশন বিল্ড হয় না। যেমন- একটি সার্চ ইঞ্জিন কি ওয়েবসাইটকে ক্রল করতে পারছে? সাইট কি প্রপারলি ইন্ডেক্স হচ্ছে? ইত্যাদি, ইত্যাদি।
কখনো যদি টেকনিক্যাল এসইও ছাড়া কেউ শুধু অনপেজ এসইও ও অফপেজ এসইও করে, তাতে কোনো লাভ হবে না। কারণ টেকনিক্যাল এসইও না করলে, সার্চ ইঞ্জিন জানতেই পারবে না আপনার ওয়েবসাইট সম্পর্কে। এতে করে ওয়েবসাইট র্যাংকও করবে না, আর ওয়েবসাইটের ভিজিটরও বাড়বে না। তাই টেকনিক্যাল এসইও খুব ইম্পর্ট্যান্ট।
⏩ Read More Post On Tune Of Life!
নিচে ৫টি গুরুত্বপূর্ণ টেকনিকাল এসইও প্র্যাক্টিস সম্পর্কে তুলে ধরা হলো:
1. Robot.txt File
একটি ওয়েবসাইটের খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি ফাইল হলো robots.txt ফাইল। প্রত্যেক সার্চ ইঞ্জিনের আলাদা আলাদা ওয়েব ক্রলার থাকে, যারা প্রতিনিয়ত পৃথিবীর সকল ওয়েব সাইট ক্রল করে ও ইন্ডেক্সিং এর জন্য টেম্পোরারিলি স্টোর করে।
একটি ওয়েবসাইটের robots.txt ফাইল, ওইসব ক্রলারকে গাইড করে যে ওই সাইটের কোন কোন জিনিস একটি ওয়েব ক্রলার ক্রল করতে পারবে। ওয়েবসাইটের কোনো প্রাইভেট পেজ বা ভালনারেবল লিংকও ক্রলিং থেকে এড়ানো যায় এই ফাইলে কিছু কোড অ্যাড করে।
অনলাইনে অনেক টুল আছে যার সাহায্যে আপনার ওয়েবসাইটের জন্য robots.txt ফাইল বিল্ড করতে পারবেন। আর ওয়ার্ডপ্রেস সাইটের ক্ষেত্রে, আপনি যদি Yoast SEO or Rankmath এর মতো কোনো এসইও প্লাগিন ইন্সটল করে থাকেন, তবে সাথে সাথেই আপনার ওয়েবসাইটের জন্য একটি ফাইল ক্রিয়েট হয়ে যাবে অটোমেটিকালি।
তাই, যদি ওয়েবসাইট ক্রলিং নিয়ে কোনো সমস্যা ফেইস করে থাকেন, সর্বপ্রথম আপনি robots.txt ফাইল এ বাগ খোঁজার ট্রাই করুন কিংবা এটি পরিবর্তন করুন।
#আরও পড়ুন » ইউটিউব থেকে আয় করার উপায়!
2. 301 Redirect
ওয়েবসাইটের অনেক ধরনের রিডাইরেক্ট অপশন আছে। কিন্তু গুগল শুধু 301 Redirect Support করে। এই রিডাইরেক্ট এর সাহায্যে কোনো লিংক থেকে নতুন লিংকে পারমানেন্ট রিডাইরেক্ট করা যায়। এর ফলে পুরোনো লিংকের যত অথরিটি বা লিংক জুস আছে, তা নতুন লিংকে ট্রান্সফার হয়ে যাবে এবং এই লিংকে ভিজিট করলে তাৎক্ষণিকভাবে নতুন লিংকে রিডাইরেক্ট করে দেবে।
তাই, কোনো পেজ যদি ডিলিট করে নতুন পেজ ক্রিয়েট করতে চান, তবে ডিলিট না করে, পুরোনো পেজ থেকে নতুন পেজে 301 Redirect করে দিলে, পুরানো লিংকের র্যাংকিং ক্যাপাবিলিটি পাস হয়ে যাবে নতুন লিংকের মাধ্যমে নতুন ওয়েব পেজে। ওয়ার্ডপ্রেসে বিভিন্ন প্লাগিন, যেমন- RankMath or Yoast SEO দ্বারা খুব সহজে 301 Redirect করা যায়।
3. 404 Page Not Found
এটি খুবই মারাত্মক একটি সমস্যা। যদি কোনো পেজ হঠাৎ ডিলিট হয়ে যায়, কিন্তু তার লিংক ইন্ডেক্সড থাকে, তবে সেই লিংকে ভিজিট করলে একটি এরর শো করে, যেটা 404 Error।
তখন ওই লিংককে ডেড লিংক বা ব্রোকেন লিংক বলা হয়। একটি ওয়েবসাইটে বেশি ব্রোকেন লিংক থাকলে সেই ওয়েবসাইটের এসইও র্যাংকিং এ সমস্যা দেখা দেয়। তাই ব্রোকেন লিংক রিমুভ করে ফেলা উচিত বা সেগুলোতে 301 Redirect করা উচিত।
#আরও পড়ুন » ইউটিউব চ্যানেল গ্রো করার টিপস!
4. HTML Sitemap
ওয়েবসাইটের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ জিনিস হলো সাইটম্যাপ। আমরা সাধারণত- xml sitemap ইউজ করি, যা হলো ক্রলারের সাইটম্যাপ। আর এইচটিএমএল সাইটম্যাপ হলো ইউজারদের সাইটম্যাপ। একটি ওয়েবসাইটের সকল পেজের লিংক, ব্রাঞ্চের মতো এই এইচটিএমএল পেজে থাকে। তাই কোনো ইউজার চাইলে খুব দ্রুত এইচটিএমএল সাইটম্যাপ পেজ থেকে যেকোনো পেজে চলে যেতে পারে। সাধারণত অনেক বড়ো বড়ো সাইটে এই ধরনের সাইটম্যাপ দেখা যায়।
5. Mobile Responsive
বর্তমানে বেশিরভাগ ইউজার মোবাইল ইউজ করে। তাই ওয়েবসাইট মোবাইল রেস্পন্সিভ হওয়া বাধ্যতামূলক। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায়, ওয়েবসাইট ডেক্সটপ মোডে খুব ভালোভাবে শো করে, কিন্তু মোবাইল মোডে খুব বাজেভাবে শো করে। এতে করে ইউজার এক্সপেরিয়েন্স ড্রপ হয়, বাউন্স রেট বাড়ে। তা ছাড়া মোবাইল রেস্পন্সিভনেস ডিরেক্টলি এসইওতে ইম্প্যাক্ট ফেলে। এই সমস্যা সমাধানের সবচেয়ে ভালো উপায় হলো Google এর AMP ইউজ করা।
6. Is Your Page Indexable?
টেকনিকাল এসইও তো করে ফেললেন। এবার দেখুন আপনার পেজ কি ইন্ডেক্স হচ্ছে? এটি গুগলে চেক করার জন্য, গুগলে সার্চ বারে টাইপ করুন,
Site:example.com। যদি দেখেন, আপনার প্রায় সকল পেজ দেখাচ্ছে, তবে মনে করবেন ওয়েব ক্রলার আপনার পেজ ক্রল করতে পারছে এবং আপনার পেজ ইন্ডেক্স হচ্ছে।
#আরও পড়ুন » সেরা ৪টি ভিডিয়ো ইডিটিং অ্যাপ্লিকেশন!
অনপেজ এসইও
অনপেজ এসইও এর মানে হলো, ওয়েবসাইটের মধ্যে যেসব এসইও অ্যাক্টিভিটি করা হয়, যার ফলে একটি সার্চ ইঞ্জিন ওই ওয়েবপেজকে নির্দিষ্ট টার্ম বা কিওয়ার্ড এর জন্য র্যাংকিং করে। একটি ওয়েবসাইটে যতো ভালো অনপেজ এসইও করা হবে, সেই ওয়েবসাইট অর্গানিক সার্চ রেজাল্টে ততো ওপরে দেখাবে এবং এতে করে অর্গানিক ভিজিটরের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বাড়বে।
গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি অনপেজ এসইও প্র্যাক্টিস নিয়ে নিচে আলোচনা করা হলো:
1. Title Optimization
একটি সাইটের পোস্ট বা পেজের টাইটেল ওয়েবসাইট এর র্যাংকিং এ খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ওয়েবসাইটের পেজ টাইটেল এমন ভাবে হতে হয়, যাতে মানুষ ওই পেজে কী আছে, তা টাইটেল দেখেই বুঝে যায়। টাইটেল হতে হবে ম্যাক্সিমাম ৬০ ক্যারেক্টারের এবং ফোকাস কিওয়ার্ড টাইটেলের সামনের দিকে থাকা খুবই ইম্পর্ট্যান্ট। কোনো প্রকার ক্লিকবেইট করে হয়তো টাইটেল থেকে ভিজিটর নেওয়া যাবে; তবে এর ফলে ওয়েবসাইটের বাউন্স রেট উল্লেখযোগ্য হারে বাড়বে, যার ফলে ওয়েবসাইট র্যাংকিং এ নেগেটিভ ইম্প্যাক্ট পড়বে।
⏩ Read More Post On #PDFMela!
2. Meta Tag Optimization
টাইটের পর একটি ওয়েবসাইটের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো পোস্ট / পেজের মেটা টাইটেল। মেটা টাইটেলে একটি ওয়েবপেজে কী কী কন্টেন্ট আছে, তার সারমর্ম তুলে ধরা হয়। ১৫০ ক্যারেক্টার এর বেশি লিখলে, মেটা টাইটেল সম্পূর্ণভাবে সার্চ রেজাল্টে প্রদর্শিত হয় না। মেটা টাইটেলে ফোকাস কিওয়ার্ড থাকা ভালো। র্যাংকিং এর ক্ষেত্রে মেটা টাইটেলের প্রত্যক্ষ প্রভাব না পড়লেও, পরোক্ষভাবে এটি ইফেক্ট ফেলে থাকে। যেমন- মেটা টাইটেল যত লুক্রেটিভ হবে, ওয়েব পেজে ভিজিটর তত বাড়বে। এর ফলে, Click Through Rate বাড়বে এবং র্যাংকিংও ইম্প্রুভ করবে।
3. Keyword Cannibalization
কিওয়ার্ড ক্যানিবালিজেশন খুবই বাজে জিনিস এসইও এর জন্য। যখন একাধিক পেজে একই ফোকাস কিওয়ার্ড ব্যবহার করেন, তখন তাকে কিওয়ার্ড Cannibalization বলে। এটা কখনোই করবেন না। চেষ্টা করবেন, প্রত্যেক পেজে একটি করে নতুন নতুন ফোকাস কিওয়ার্ড ইউজ করতে। এতে পেজের ইউনিকনেস বজায় থাকবে।
4. Search Intent
আপনার পেজের কনটেন্ট কি সার্চ ইন্টেন্ট স্যাটিসফাই করছে কিনা তার প্রতি নজর রাখুন। বিভিন্ন ধরনের সার্চ ইন্টেন্ট আছে, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- ইনফর্মেশন, ট্রান্সেকশনাল, কম্পেরিজন, ন্যাভিগেশনাল। আপনার কন্টেন্ট কোন ধরনের সার্চ ইন্টেন্ট ফলো করে লক্ষ করুন এবং সে অনুযায়ী আপনার কন্টেন্টকে অপ্টিমাইজ করুন। কিন্তু কখনোই কন্টেন্টকে ওভার অপ্টিমাইজ করবেন না।
⏩ Read More: NID Card Online Download 2023
5. Keyword Density
কিওয়ার্ড ডেন্সিটি মানে হলে, আপনার কন্টেন্টে কত ঘন ঘন ফোকাস কিওয়ার্ড থাকবে। চেষ্টা করবেন ৫০০ ওয়ার্ডের ভেতরে মেইন কিওয়ার্ড অন্তত ৩ বার ব্যবহার করতে। কিওয়ার্ড ডেন্সিটি বেশি হলে, গুগল পেনালাইজ করতে পারে আপনার ওয়েবপেজকে। অযথা ফোকাস কিওয়ার্ড না লিখে, ন্যাচারালি যাতে পর্যাপ্ত সংখ্যক কিওয়ার্ড আসে, যেভাবে কন্টেন্ট লিখুন!
6. URL Length
আপনার পোস্ট / পেজের URL যতো রিলেভেন্ট ও যতো ছোটো হবে তত ভালো। পোস্টনেইম স্টাইলে URL build করবেন সব সময়, যাতে মেইন ডোমেইনের সাথে পেজের টাইটেল স্লাগ হিসেবে থাকে। এইটাই সবচেয়ে বেশি এসইও ফ্রেন্ডলি ইউআরএল স্ট্রাকচার! এ ছাড়া, এই স্টাইলের ইউআরএল দেখলে, কন্টেন্ট সম্পর্কে আইডিয়া পাওয়া যায়।
**********
টেকনিক্যাল বনাম অনপেজ এসইও: শেষ কথা
প্রিয় পাঠক, এই ছিল টেকনিক্যাল বনাম অনপেজ এসইও নিয়ে বিস্তারিত। টেকনিক্যাল বনাম অনপেজ এসইও বিষয়ে অনেকেই মনে করেন, টেকনিক্যাল এসইও আর অনপেজ এসইও একই জিনিস। কিন্তু আসলে তা সত্যি নয়। তবে একটি ওয়েবসাইট র্যাংকিং এর ক্ষেত্রে টেকনিকাল এসইও এবং অনপেজ একে অপরের পরিপূরকের মতো কাজ করে থাকে। এ ছাড়া টেকনিক্যাল এসইওকে অনেকে অফপেজ হিসেবে মানে! তবে যাই হোক, দুইটা সেগমেন্ট যদি খুব ভালোভাবে ও লেজিট ওয়েতে করা হয়, তবে আশা করা যায় একটি ওয়েবসাইট এর এসইও স্কোর তত বাড়বে এবং সাইটের অর্গানিক ট্রাফিক গ্রোথ হবে!
লেখক: UMAR BIN NAZIM
সহলেখক: ABUL HASNAT BADHON
Pingback: বিবর্তন | সাহিত্য, অন্যান্য, গল্প, মুক্তকথা | Badhon
Pingback: এক ভাষা সেনাপতির কথা! | সাহিত্য | Badhon
Pingback: ইউটিউব থেকে আয় করার উপায়! | ইউটিউবিং | Badhon