About Me

About Me

ক্রমশ ছোটো হয়ে আসা দিন, ফিসফিসিয়ে বলে-
ঘড়ির ভেতর ঢুকে যাচ্ছে স্তন্যপায়ী রাত!
জলরঙা সব নোনতা কষ্টে জমে যাচ্ছে বিষাদপাহাড়।
বুক পকেটে ঘুমিয়ে আছে ছেঁড়া প্রেমপত্রের আটটি টুকরো।

জলজ চোখ একদিন লিখে রাখে –
আমাদের সমস্ত প্রেমিকাদের নরম বুকে
কষ্ট দেবার কঠিন অস্ত্র ছিল।
ভালোবাসার হেমলক পানের পূর্বদৃশ্যে আমি
একটা ফুল ও ঘাসের গল্প এঁকে রাখি জলপাই রঙা মাঠে।

আমার অন্তিম কণ্ঠস্বর-
নার্সিসাস! তুমি একান্তই নার্সিসাস!
আমারই মতোই ধর্ষিত হয়েছো নিজের কাছে!
তোমার প্রজাপতি যৌবন পরিযায়ী হয়েছে সন্ধ্যাকালীন একাকিত্বে।

ঈশ্বর,
আমি চিনে গেছি, আপনি একজন নির্দয় অহংকারী।
আপনার সমস্ত দয়ার সাগর অ-ধার্মিকের প্রতি।
আমার আর আপনার মধ্যেকার অদৃশ্য দূরত্বে আমি কিছু কচুরিপানা ফুল আর একগুচ্ছ অনঘ কবিতা রেখে যাচ্ছি।
বিনিময়ে আমাকে হাবিয়ার আগুন উপহার দিয়েন।

অক্সিজেন,
রাত বাড়ে; আঁধারের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ে,
তুমিহীন নিশ্বাসগুলোর বিমর্ষ হাহাকার!
যাপিত জীবন থেকে একমুঠো স্মৃতিঝিনুক তুলে এনে ছড়িয়ে দিই নস্টালজিক উঠোন জুড়ে।
ফিনকি ফোঁটা জোছনায় ওরা ডালপালা মেলে উড়ে যায় নিঃসঙ্গ বাজপাখির মতো।

মা এবং আত্মজা,
আমি তোমাদের জ্যামিতিকভাবে পরিমাপ করতে গিয়ে,
আটকে পড়ি একটা বৃত্তের বিস্তৃতিতে;
বৃত্তের কেন্দ্র- ভালোবাসা কিংবা মমতা।
ঈশ্বর প্রদত্ত দুটো স্বর্গের দুয়ারে আমি বারংবার হোঁচট খাই,
একটা অস্পৃশ্য মোহের কারণে।
অথচ, দরজার ওপাশে আমার দুই’ দুইটা বেহেশত।

পিতা,
তোমা হতেই সৃষ্টি আমার, তোমাতেই সমাপ্তি।
অথচ, তোমার প্রতিটা ঘামের ফোঁটার ঋণ শোধ করা হয়নি আমার।
শাশ্বত প্রাচীরে আগলে রেখেছিলে আমায়, ঝড়ঝাপটা থেকে।
অথচ, আজও তুমি বৃষ্টিজলে স্নান করলেও, আমি ছাউনি হতে পারিনি।
তোমার বুকের উমে শুধু একবার শ্বাস টেনে বলে যেতে চাই-
‘ভালোবাসি!’

ঝকঝকাঝক শব্দে আমার ভেতর ছুটে যাচ্ছে আস্ত একটা সরীসৃপ ট্রেন।
ট্রেনভর্তি প্রিয়মুখ, প্রিয়স্মৃতি আর অজস্র অভিজ্ঞতা;
একটা বোহেমিয়ান জীবন!
অদূরেই সর্বশেষ স্টেশন;
সমাপ্তি হুইসেল বাজিয়ে, চিরতরে থেমে যাবে এই মহাজাগতিক যাত্রা।
সময় এখন নৈঃশব্দ্যের!

পৃথিবী,
তোমরা হা-হুতাশ কোরো না।
জল ফেলো না একটুও;
সবটুকু জমিয়ে রেখো তার জন্য।
আমার উপস্থিতি যার মুখে বিরক্তির রেখা টানাতো,
আমার কণ্ঠস্বর যার কানে বিদঘুটে ভায়োলিন বাজাতো,
আমার শব্দরা যার চোখে ফোটাত বিষাক্ত হূল;
আমি যার ধরণি জুড়ে অপ্রিয়, ঘৃণ্য জন্তু।
তার জন্য।

একদিন ঘন কুয়াশার রাতে,
ঘোরলাগা চোখে আদ্র কাঠগোলাপ টেনে,
হন্তদন্ত হয়ে আমায় খুঁজবে সে;
অস্থির চিত্তে নিশ্বাস গুনবে আমার প্রতীক্ষায়!
অথচ তখন, কোথাও কেউ নেই!
ভেতরের রক্তক্ষরণ সেই কবেই শুকিয়ে গিয়ে ফসিল হয়ে গেছে, আস্ত একটা অবিশ্বাসী হৃৎপিণ্ড!

‘আত্মহনন চিরকুট কিংবা একটা মৃত্যু বিষয়ক বিজ্ঞপ্তি’ | © আবুল হাসনাত বাঁধন
(২৬/০৭/২০১৭)
পটিয়া, চট্টগ্রাম।
উৎসর্গ: যাকে সবচেয়ে বেশি বিরক্ত করি আমি। ☹️

এইতো আমি, মৃত্যুর অপেক্ষায় নিশ্বাস গোণা একজন ক্লান্ত জীবন্মৃত প্রাণী। কবিতা আমার স্বর্গ, আর বই হলো আমার বাসস্থান। বইয়ের পাতায় নাক ডুবিয়ে ঘ্রাণ নিতে ভীষণ ভালো লাগে আমার। আমি চাই, একটা উপন্যাসের বই হাতে শেষ নিশ্বাস টানতে। সেদিন খুব বৃষ্টি হোক। আকাশের কান্নায় এই নষ্ট শহরের সমস্ত পাপ ধুয়ে যাক। আমি ঘাসফুল দেখতে দেখতে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করে নেবো।

প্রিয় স্ব-পঙক্তি: জলপাই রঙা কষ্ট দিয়ে তোমাদের শহর লিখি…

পেশা ও শিক্ষাগত ইন্ট্রো:

কবি, লেখক, বিজ্ঞান-প্রযুক্তি সাংবাদিক ও ফ্রিল্যান্সার [এসইও এক্সপার্ট, ওয়ার্ডপ্রেস কাস্টমাইজার ও ডিজিটাল মার্কেটার]!

দীর্ঘদিন যাবত চট্টগ্রামের অনলাইন নিউজ পোর্টাল সন্দেশ২৪ এর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের সম্পাদক হিসেবে কাজ করেছি। এ ছাড়া বিভিন্ন সাইটে ফ্রিল্যান্স আর্টিকেল রাইটার হিসেবে কাজ করেছি!

বর্তমানে আমার নিজের ওয়েবসাইট- বিজ্ঞান বিষয়ক নিউজ পোর্টাল www.biggannews.com ও গল্প বিষয়ক পোর্টাল www.golpiyan.com এর প্রধান সম্পাদক হিসেবে কাজ করছি!

পড়াশোনা করেছি- ‘জীব-প্রযুক্তি ও জিন প্রকৌশল‘ বিষয়ে, স্নাতক!

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সেক্টরের মানুষ হলেও আমার নাড়ি সাহিত্যের সাথে বাঁধা! তাই বইপড়া ও লেখালিখিই আমার প্রিয় শখ!

২০১৭ ও ২০১৮ বই মেলাতে আমার সম্পাদনায় প্রকাশিত হয়েছে ২টি কাব্যগ্রন্থ ও ২টি গল্প গ্রন্থ! নিজে পছন্দের কাজগুলোর মধ্যেই সব সময় বেঁচে থাকতে চাই!

স্যোশাল মিডিয়ায় আমি:

ফেসবুক
টুইটার
ইন্সটাগ্রাম
লিংকডইন
টেলিগ্রাম
ইউটিউব

Share With Love: